আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, প্রাচীনকালে সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ফিজিক্স ও রসায়ন প্রভৃতি বিষয় স্পষ্টভাবে ছিল না। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনে, সমাজের প্রয়োজনে এই বিষয়গুলোর সৃষ্টি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দ্বাদশ শতকের শেষদিকে বা ত্রয়োদশ শতকের প্রথমে ইতালির বোলনায় প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। টেভেলিয়ানের লেখা ‘ইংলিশ স্যোশাল হিস্ট্রি’ থেকে জানা যায়, কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, ধর্ম ও গণিত বিষয়গুলো প্রথমদিকে পড়ানো হতো।
২৬ মে ২০২৪, রবিবার, সকাল ১১টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্যোশিওলজি এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ৮ম, ৯বম, ১০ম ব্যাচের বরণ এবং ১ম, ২য়, ৩য় ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ‘রাষ্ট্রের আগে সমাজ’ উল্লেখ করে আধুনিক সভ্য সমাজ হিসেবে মেসোপটেমিয়া, চীন, দক্ষিণ আমেরিকা ও এই উপমহাদেশের সভ্য সমাজের বিবরণ দেন। তিনি সমাজদার্শনিক হিসেবে প্লেটো, এরিস্টটল, ইবনে খালদুনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্লেটোই প্রথম রাষ্ট্রের শ্রেণিকরণ করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রের কথা বলেছেন। তিনি গণতন্ত্রের সমর্থক ছিলেন না। তাঁর শিক্ষক সক্রেটিসের বিচারকার্যে ৫০০ জন জুরার উপস্থিত ছিলেন এবং অধিকাংশ জুরার সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, যার কারণে সক্রেটিসকে হেমলক পানে মৃত্যুবরণ করতে হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রেটিসের এই মৃত্যু প্লেটো কখনো মেনে নিতে পারেননি। তিনি মনে করতেন, কোনো কিছু পরিচালনা করতে গেলে বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলেও বিশেষজ্ঞের দরকার। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধির পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কারণ, তাঁর মতে, তাঁরা রাষ্ট্র বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয়। কিন্তু আজ বিশে^র বিভিন্ন দেশে যে-গণতন্ত্র প্রচলিত হয়েছে, তাতে প্রতিটি মানুষের ভোটাধিকার রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে সমাজের বিবর্তনের ফলে। সমাজদার্শনিক, সমাজতাত্ত্বিকদের সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা সেই সমাজেরই বিবর্তনের ফল। সমাজদার্শনিকদের ব্যাখ্যাও সমাজের পরিবর্তনের বড় ভিত্তি হয়। যেমন অষ্টাদশ শতকে এনলাইটেনমেন্ট সমাজচিন্তকদের সমাজব্যাখ্যা গোটা ইউরোপকে পরিবর্তন করেছিল। এবং তার ফলেই বিজ্ঞানের যে-অগ্রগতি ঘটে, তা ইউরোপকে প্রায় সারাবিশ্বকে তাদের অধীনে নিতে সাহায্য করেছিল। আজ প্রযুক্তি সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করলেও তা যেন প্রয়োজনীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থিতি দেয়, যেগুলোর মূলে রয়েছে মানবিকতা।
কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী। স্বাগত বক্তা ছিলেন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী। সঞ্চালক ছিলেন বিভাগের শিক্ষক অর্পা পাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ইত্যাদি প্রযুক্তি সমাজবিশ্লেষণে ও গবেষণাপদ্ধতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। এছাড়াও তিনি সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কোড অব কন্ডাক্ট তুলে ধরে বলেন, আমার বিশ্বাস, শিক্ষার্থীরা তা যথাযথভাবে মেনে চলবে।
কো-অর্ডিনেটর ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী বলেন, সমাজতত্ত্ব ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধ শেখায়; এছাড়াও শেখায় ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার ছেড়ে কাজ করতে ও মানবিক হতে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, সমাজবিজ্ঞান একটি মাতৃস্থানীয় বিষয়। মা যেমন সবকিছুকে দখল করে রাখে, তেমনি সমাজবিজ্ঞানও সব বিষয়কে আগলে রাখে। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে সিম্পোজিয়াম ।
Read Moreপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি-ইউটিএস প্রোগ্রামের ৬ষ্ঠ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ।
Read Moreপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগে ‘পোস্ট বাজেট ডিসকাশন : ২০২৫-২০২৬’ শীর্ষক সেমিনার ।
Read Moreবাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইকিউএসি পরিদর্শন ।
Read Moreএনএসইউ’র সোশ্যাল বিজনেস একাডেমিয়া ডায়ালগ ও থ্রি জিরো ক্লাব কনভেনশনে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির ।
Read MoreProf. Nasrul Qadir envisages a politically aware, academically strong generation.
Read Moreপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে ‘প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জাতীয় বাজেট-২০২৫-২০২৬’ শীর্ষক সেমিনার ।
Read MoreSunday, 26 May, 2024
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, প্রাচীনকালে সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ফিজিক্স ও রসায়ন প্রভৃতি বিষয় স্পষ্টভাবে ছিল না। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনে, সমাজের প্রয়োজনে এই বিষয়গুলোর সৃষ্টি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দ্বাদশ শতকের শেষদিকে বা ত্রয়োদশ শতকের প্রথমে ইতালির বোলনায় প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। টেভেলিয়ানের লেখা ‘ইংলিশ স্যোশাল হিস্ট্রি’ থেকে জানা যায়, কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, ধর্ম ও গণিত বিষয়গুলো প্রথমদিকে পড়ানো হতো।
২৬ মে ২০২৪, রবিবার, সকাল ১১টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্যোশিওলজি এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ৮ম, ৯বম, ১০ম ব্যাচের বরণ এবং ১ম, ২য়, ৩য় ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ‘রাষ্ট্রের আগে সমাজ’ উল্লেখ করে আধুনিক সভ্য সমাজ হিসেবে মেসোপটেমিয়া, চীন, দক্ষিণ আমেরিকা ও এই উপমহাদেশের সভ্য সমাজের বিবরণ দেন। তিনি সমাজদার্শনিক হিসেবে প্লেটো, এরিস্টটল, ইবনে খালদুনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্লেটোই প্রথম রাষ্ট্রের শ্রেণিকরণ করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রের কথা বলেছেন। তিনি গণতন্ত্রের সমর্থক ছিলেন না। তাঁর শিক্ষক সক্রেটিসের বিচারকার্যে ৫০০ জন জুরার উপস্থিত ছিলেন এবং অধিকাংশ জুরার সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, যার কারণে সক্রেটিসকে হেমলক পানে মৃত্যুবরণ করতে হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রেটিসের এই মৃত্যু প্লেটো কখনো মেনে নিতে পারেননি। তিনি মনে করতেন, কোনো কিছু পরিচালনা করতে গেলে বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলেও বিশেষজ্ঞের দরকার। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধির পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কারণ, তাঁর মতে, তাঁরা রাষ্ট্র বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয়। কিন্তু আজ বিশে^র বিভিন্ন দেশে যে-গণতন্ত্র প্রচলিত হয়েছে, তাতে প্রতিটি মানুষের ভোটাধিকার রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে সমাজের বিবর্তনের ফলে। সমাজদার্শনিক, সমাজতাত্ত্বিকদের সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা সেই সমাজেরই বিবর্তনের ফল। সমাজদার্শনিকদের ব্যাখ্যাও সমাজের পরিবর্তনের বড় ভিত্তি হয়। যেমন অষ্টাদশ শতকে এনলাইটেনমেন্ট সমাজচিন্তকদের সমাজব্যাখ্যা গোটা ইউরোপকে পরিবর্তন করেছিল। এবং তার ফলেই বিজ্ঞানের যে-অগ্রগতি ঘটে, তা ইউরোপকে প্রায় সারাবিশ্বকে তাদের অধীনে নিতে সাহায্য করেছিল। আজ প্রযুক্তি সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করলেও তা যেন প্রয়োজনীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থিতি দেয়, যেগুলোর মূলে রয়েছে মানবিকতা।
কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী। স্বাগত বক্তা ছিলেন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী। সঞ্চালক ছিলেন বিভাগের শিক্ষক অর্পা পাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ইত্যাদি প্রযুক্তি সমাজবিশ্লেষণে ও গবেষণাপদ্ধতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। এছাড়াও তিনি সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কোড অব কন্ডাক্ট তুলে ধরে বলেন, আমার বিশ্বাস, শিক্ষার্থীরা তা যথাযথভাবে মেনে চলবে।
কো-অর্ডিনেটর ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী বলেন, সমাজতত্ত্ব ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধ শেখায়; এছাড়াও শেখায় ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার ছেড়ে কাজ করতে ও মানবিক হতে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, সমাজবিজ্ঞান একটি মাতৃস্থানীয় বিষয়। মা যেমন সবকিছুকে দখল করে রাখে, তেমনি সমাজবিজ্ঞানও সব বিষয়কে আগলে রাখে। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।