প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে বঙ্গবন্ধু-পিইউডিএস জাতীয় বিতর্ক উৎসবে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ থেকে একশত বছর আগে জন্ম নিয়েছিলেন বলেই আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। এই বাংলাদেশের যা কিছু, সব তাঁরই কারণে। হাজার বছরের পরাধীন বাঙালিকে স্বাধীনতা ও এই দেশ দেওয়ার জন্য তিনি পাকিস্তানের প্রায় তেইশ বছরের শাসনামলে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অবর্ণনীয় কারানির্যাতন ভোগ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রাপ্ত বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিল, এই দেশ হবে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল। এই দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে থাকবে প্রগতির ছোঁয়া।
গতকাল ৬ মার্চ ২০২০, শুক্রবার, সকাল সাড়ে নয়টায় ‘তর্জনী তাঁর মুক্তির কথা বলে’ শ্লোগানকে সামনে রেখে নগরীর দামপাড়াস্থ প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু-পিইউডিএস জাতীয় বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিষ্ঠার দশম বছরে এসে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (পিইউডিএস) মুজিববর্ষ বা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে এই বিতর্ক উৎসবের সূচনা করেছে।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যবর্গকে গভীরভাবে স্মরণ করেন। তিনি আরও স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের তিরিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনের কথা। তিনি বলেন, তরুণ বয়সেই বঙ্গবন্ধুর মধ্যে চমৎকার রাজনৈতিক দর্শন ও রাষ্ট্রচিন্তা গড়ে উঠেছিল। এই রাজনৈতিক দর্র্শন ও রাষ্ট্রচিন্তার সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচিত হওয়া দরকার। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ ও কার্ল মার্কসের ‘পোভার্টি অব ফিলোসফি’ গ্রন্থের বিভিন্ন তথ্য ও ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
তিনি ‘বঙ্গবন্ধু নিরন্তর সমাজ পরিবর্তনের চিন্তা করতেন’ উল্লেখ করে পিইউডিএস-এর বিতার্কিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাজ পরিবর্তনের জন্য বা যুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের জন্য গতানুগতিক অনুশীলনের বাইরে গিয়ে ভালো ভালো বিষয়ে বিতর্ক করতে হবে। এই বিতর্কের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে সমাধান।
তিনি বিতার্কিকদের ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও ডিসেন্টিং ওপেনিয়ন চর্চা করার জন্য আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (পিইউডিএস)-এর চীফ মডারেটর জুলিয়া পারভিন।
বিশেষ অতিথি ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক বলেন, পিইউডিএস মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু-পিইউডিএস জাতীয় বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করায় তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা চাই, এভাবে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বুদ্ধিবৃত্তির চর্চার মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠুক।
বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, বিতর্ক হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তির অন্যতম একটি দিক। বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা ছাড়া বিতর্ক সম্ভব নয়।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (পিইউডিএস)-এর সাবেক সভাপতি সাবের শাহ্র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য জনাব বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহিন, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের প্রফেসর অমল ভূষণ নাগ, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের সহকারী ডিন মঈনুল হক, প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তানজিনা আলম চৌধুরী, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাদাত জামান খান, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী, পিইউডিএস-এর মডারেটর সঞ্জয় বিশ্বাস, মডারেটর হিল্লোল সাহা, মডারেটর মিনহাজ হোসাইন, মডারেটর নিলুফার সুলতানা, মডারেটর সাইফুদ্দিন মুন্না, মডারেটর ফারিয়া হোসেন বর্ষা, মডারেটর নুসরাত শারমিন ও মডারেটর শহীদুল আলম রোমেল প্রমুখ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপাচার্যের উপদেষ্টা ও প্রধান প্রকৌশলী জনাব মো. আবু তাহের, রেজিস্ট্রার জনাব খুরশিদুর রহমান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিম এবং ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান জনাব কাউসার আলম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এই বিতর্ক উৎসবে ২৪টি স্কুল বিতর্ক দল, ১৮টি কলেজ বিতর্ক দল ও ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক দল অংশ নিচ্ছে। এই বিতর্ক উৎসব চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দিনব্যাপী স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ মার্চ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।